যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলেছে, গর্ভপাত করা মার্কিন নারীদের সাংবিধানিক অধিকার নয়।গর্ভপাতের অধিকার দেওয়া প্রায় পাঁচ দশকের একটি পুরোনো আইন বাতিল করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। এ আদেশের প্রতিক্রিয়ায় রিপাবলিকান পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘ঈশ্বরই এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।’
স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রক্ষণশীল সংখ্যাগরিষ্ঠ সুপ্রিম কোর্ট ৬-৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এ রায় দেন। জাতীয় আইনটি বাতিল করে আদেশে বলা হয়েছে, এখন অঙ্গরাজ্যগুলো নিজেদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গর্ভপাতের অনুমতি প্রদান অথবা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আইন করতে পারে।
আদেশের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, ‘সংবিধান মেনেই এটা হচ্ছে। অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা তাঁদের আরও অনেক আগেই ফিরিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।’
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে সুপ্রিম কোর্টে তিনজন রক্ষণশীল বিচারক নিয়োগ দেন ট্রাম্প। তাই এ আদেশে নিজের ভূমিকা আছে বলে মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘ঈশ্বর এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।’
অবশ্য কিছুক্ষণ পরই এ আদেশের জন্য কৃতিত্ব দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ( ট্রাম্প)। এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘আজকের এ সিদ্ধান্ত একটি প্রজন্মের জীবনে সবচেয়ে বড় জয়। এটা কেবল সম্ভব হয়েছে, অঙ্গীকার অনুযায়ী আমি সবকিছু বাস্তবায়ন করেছিলাম বলেই। এর মধ্যে রয়েছে তিনজন অত্যন্ত সম্মানিত ও শক্তিশালী সংবিধান বিশেষজ্ঞকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে মনোনয়ন ও নিয়োগ নিশ্চিত করা। এ কাজ করতে পারা আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের।’
ট্রাম্প তাঁর চার বছর মেয়াদে সুপ্রিম কোর্টে তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দেন। এতে সর্বোচ্চ আদালতে রক্ষণশীল বিচারপতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হয়। এই তিন বিচারপতি হলেন নিল গোরসুচ, ব্রেট কাভানাফ ও অ্যামি কনি ব্যারেট। শুক্রবারের রায়ে তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ পক্ষেই ছিলেন।
জনগণের উদ্দেশে বিবৃতিতে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘যদিও উগ্র বামপন্থীরা আমাদের দেশটি ধ্বংস করতে তাদের সামর্থ্যের সবকিছুই করছে, (সুপ্রিম কোর্টের কল্যাণে) আপনাদের অধিকার সুরক্ষা পাচ্ছে। দেশকে রক্ষা করা হচ্ছে। এখনো আশা আছে। এখন আমেরিকাকে রক্ষা করার সময়।’
অন্য দিকে বিপরীত শিবিরে থাকা স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত সুপ্রিম কোর্ট দলটির ‘অন্ধকার এবং চরম লক্ষ্য’ বাস্তবায়ন করেছে। পেলোসি বলেন, ‘আমেরিকান নারীদের স্বাধীনতা আজ তাদের মায়ের আমলের চেয়েও কম। এই নিষ্ঠুর রায় অমানবিক এবং হৃদয়বিদারক। ’
সুপ্রিম কোর্টেরই প্রতিষ্ঠিত একটি দীর্ঘস্থায়ী নজির আদালতে উল্টে যাওয়ায় অতীতে শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত দেওয়া আরো কিছু অধিকারের জন্যও আশঙ্কা তৈরি করেছে।